মসজিদের জায়গা দখলে নিয়ে বিএনপির ক্লাব নির্মাণ, স্থানীয়দের ক্ষোভ

শরীয়তপুরের নড়িয়ায় একটি মসজিদের জায়গা দখলে নিয়ে ক্লাব নির্মাণের অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে। শরীয়তপুর জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি রেজাউল হাওলাদার ও তার অনুসারীরা ক্লাবটি করলেও মসজিদ কমিটির সভাপতির থেকে নেননি কোনো অনুমতি।

জানা যায়, উপজেলার ঘড়িষার বাজারের শত বছরের পুরোনো ঘড়িষার জামে মসজিদ। এই মসজিদের জমিতে ভাড়া দেয়া রয়েছে অনেক ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট। যা থেকে প্রতি মাসে মসজিদের আয় হয় কয়েক লাখ টাকা। সেই টাকা দিয়ে করা হয় মসজিদের উন্নয়নকাজ। কয়েকদিন আগে মসজিদের একটি পরিত্যক্ত দোকানঘর ভেঙে ঘড়িষার ইউনিয়ন বিএনপির ক্লাব তৈরি করে দখলে নিয়েছেন স্থানীয় নেতাকর্মীরা। যদিও মসজিদ কমিটি থেকে এই ক্লাব তৈরির জন্য কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি বলে দাবি করেছেন মসজিদ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাজারের কিছু ব্যবসায়ী জানান, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি রেজাউল হাওলাদার ও তার অনুসারীরা মসজিদের পুকুর পাড়ের একটি জায়গার গাছপালা কেটে বিএনপির ক্লাব তৈরি করেন। মসজিদের জায়গায় বিভিন্ন দোকানঘর ভাড়া দেয়া থাকলেও এই বিএনপির ক্লাব তৈরির জন্য মসজিদ কমিটি থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

শুভ নামে স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, শরীয়তপুরে ঘড়িষার বিএনপির দুটি গ্রুপ রয়েছে। একটি গ্রুপ জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণের। আরেকটি কর্নেল ফয়সালের। যারা ক্লাবটি নির্মাণ করেছে তারা কর্নেল ফয়সালের অনুসারী। আর এই ক্লাব তৈরির নেতৃত্বে ছিল জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি রেজাউল হাওলাদার। যদিও এ বিষয়ে আমরা মুখ খুলতে পারছি না।

মসজিদ কমিটির সভাপতি অ্যাডভোকেট ফিরোজ আহমেদ বলেন, তারা নিজেরাই দায়িত্ব নিয়ে ক্লাবটি উঠিয়েছে। ভাড়া দেয়ার বিষয়টি আমাদের জানায়নি। ক্লাব ঘরটি তৈরির সময় আমার থেকে কোনো অনুমতি নেয়া হয়নি।

দখলের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সহ-সভাপতি রেজাউল হাওলাদার বলেন, আমরা মসজিদ কমিটির থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে ক্লাব ঘর তৈরি করেছি। মসজিদ কমিটি কি অনুমতি দিয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মসজিদ কমিটির উপদেষ্টা যারা আছে তাদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। আমি সভাপতি সঙ্গে আলোচনা করে নেব। যদি মসজিদ কমিটি অনুমতি না দেয় ক্লাব ঘর ভেঙে ফেলবো।

এ ব্যাপারে জানতে জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরণ বলেন, আমি এমন কোনো অভিযোগ এখন পর্যন্ত পাইনি। বিএনপির নামে ভাঙিয়ে মসজিদের জায়গা দখল করে ক্লাব করার কোনো সুযোগ নেই। তাছাড়া মনে হচ্ছে কোথাও ভুল হচ্ছে, আমার এটি বিশ্বাস হচ্ছে না যে, কেউ মসজিদের জায়গা দখল নিয়ে ক্লাব করবে। এরপরেও যদি মসজিদ কমিটি আমার কাছে বিষয়টি জানায় আমি তা সমাধানে উদ্যোগ নিব।